১২ দিনের অনশনে অসুস্থ রেলের দেড় শতাধিক গেটকিপার
নিজস্ব প্রতিবেদক
১০ মার্চ, ২০২২, 6:49 PM

নিজস্ব প্রতিবেদক
১০ মার্চ, ২০২২, 6:49 PM

১২ দিনের অনশনে অসুস্থ রেলের দেড় শতাধিক গেটকিপার
বাংলাদেশ রেলওয়ের মানোন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় নিয়োগ পাওয়া এক হাজার ৮৮৯ জন গেটকিপারের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থায়ীকরণের দাবিতে অনশন কর্মসূচি চলছে। বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও রেলপোষ্য এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের ১৮৮৯ জন গেটকিপার রাজস্বকরণ বাস্তবায়ন ঐক্য পরিষদ পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চলের উদ্যোগে অনশন চলছে।
রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি শুরু হয় অনির্দিষ্টকালের আমরণ অনশন। বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) ১২তম দিনেও অনশন অব্যাহত রেখেছেন গেটকিপাররা। দীর্ঘ সময় অনশনের ফলে এরই মধ্যে ২০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক এবং দেড় শতাধিক গেটকিপার অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।১২ দিন ধরে কমলাপুরে খোলা আকাশের নিচে গেটকিপাররা অনশন চালিয়ে আসলেও এখন পর্যন্ত রেলপথ মন্ত্রণালয়ের কোনো সাড়া মেলেনি। এ অবস্থায় দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত গেটকিপাররা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আগামী শনিবারের (১২ মার্চ) মধ্যে একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করলে ১৩ মার্চ রেল ভবন চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন তারা। অবস্থান কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত থাকবেন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও রেলপোষ্য গেটকিপারদের পিতারা। অনশনের কারণে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার সৃষ্টি হলে তার দায় রেলপথ মন্ত্রণালয়কে নিতে হবে বলেও জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
গেটকিপাররা বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের মানোন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পে এক হাজার ৮৮৯ জন গেটকিপার অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে নিয়োজিত আছি। এর মধ্যে ৫৭২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, ৫৫৫ জন রেলপোষ্য এবং ৩২৫ জন নারী গেটকিপার রয়েছেন। ২০১৯ সালের ২৯ ডিসেম্বর একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী এ প্রকল্পের কর্মরত গেটকিপারদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করে চাকরি স্থায়ীকরণের উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দেন। কিন্তু রেলপথ মন্ত্রণালয় এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।
তারা অভিযোগ করেন, আমরা রেলপথ মন্ত্রণালয়ে বহুবার স্মারকলিপি দিয়েছি, চিঠি দিয়েছি। আমাদের দুর্দশার কথা জানিয়েছি। কিন্তু তারা আমাদের কোনো কথায় কর্ণপাত করেনি।আন্দোলনকারীরা বলেন, নিয়োগের সময় গেটকিপারদের বেতন নির্ধারণ করা হয় ১৪ হাজার ৪৫০ টাকা। বিগত পাঁচ বছরে এ বেতন বাড়েনি। বেশির ভাগ গেটকিপার তাদের নিজ জেলা ব্যতীত অন্য জেলায় চাকরি করেন। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে বাসা ভাড়া, পরিবারের ভরণপোষণ, ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া, চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে হিমশিম খেতে হয়। অপরদিকে কর্মরত অধিকাংশের বয়স ৩২ বছর অতিক্রম করায় অন্য চাকরিতেও ঢোকার সুযোগ নেই।এসব গেটকিপারদের চাকরির মেয়াদ প্রায় পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। তাই অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে তাদের চাকরি রাজস্বখাতে স্থানান্তর করার জোর দাবি জানান আন্দোলনকারী গেটকিপাররা।
অনশন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন ঢাকা বিভাগের গেটকিপার সুজন আহমদ, মো. আল মামুন, কাওছার, মাহাবুব আলম মাফুল, আবু সাঈদ আকন্দ, চট্টগ্রাম বিভাগের জাবেদুল হক, মো. মাসুদুল ইসলাম, পাকশি বিভাগের রূপা পারভীন, কাজী পিয়াস, সোহেল, ছোটন প্রমুখ।