শ্রমিকরা অধিকার আদায়ে আর কত চিৎকার করবে : মোঃ মনিরুজ্জামান মনির
নিজস্ব প্রতিবেদক
০১ মে, ২০২২, 10:38 AM

নিজস্ব প্রতিবেদক
০১ মে, ২০২২, 10:38 AM

শ্রমিকরা অধিকার আদায়ে আর কত চিৎকার করবে : মোঃ মনিরুজ্জামান মনির
আর কতদিন চিৎকার করলে অসহায় শ্রমিক-কর্মচারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। গতকাল এক বিবৃতিতে এমনটাই জানিয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ে পোষ্য সোসাইটির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির।
তিনি বলেন, ১লা মে জাতীয় মে দিবস বা আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস পালিত হয়ে আসছে। মে দিবস আসলেই বাংলাদেশের বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন গুলো মে দিবসের সফলতা কামনা করে ব্যানার, ফেস্টুন আর শিকাগোর সেই গল্প লিখে ফেসবুকে পোস্ট আর পত্রিকায় লেখার ছাড়াছাড়ি হতে দেখা যায়। সেই সাথে শ্রমিক সংগঠন গুলো বিশাল মিটিং, মিছিল সমাবেশের মাধ্যমে শোডাউন করে নিজেদের শক্তির জানান দেয়। যদিও মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে গতবছর কেউ শোডাউন করতে পারেনি। প্রতিবছর মে দিবস আসে যায়, কিন্তু বাংলাদেশের শ্রমিক কর্মচারীদের অধিকার কতটুকু আদায় হয়েছে সেদিকে কারো নজর নেই। শ্রমিক সংগঠন গুলো আজ রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও ভোটের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে ব্যস্ত। যেমন বাংলাদেশ রেলওয়েতে অনেক গুলো শ্রমিক সংগঠন রয়েছে, কিন্তু তারা কি পারছে শ্রমিক কর্মচারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে। পারছে না। কারণ এই সংগঠন গুলো বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অন্তর্ভুক্ত।
মনিরুজ্জামান মনির আরও বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়েতে জনবল নিয়োগে দুর্নীতি, মালামাল ক্রয়ে দুর্নীতি, উন্নয়ন মুলক কাজে দুর্নীতি, বিদেশে প্রশিক্ষনে পাঠানোর ক্ষেত্রে দুর্নীতি, ট্রেন্ডারে অনিয়ম, এমনকি পদোন্নতিতেও দুর্নীতি, আবার দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের পুরস্কার হিসেবে দেয়া হয় পদোন্নতি। অথচ যাদের কঠোর পরিশ্রমে রেলপথ সচল থাকে, সেই সকল রেলওয়ে মাঠ পর্যায়ের শ্রমিক কর্মচারীরা দীর্ঘদিন থেকে তাদের বিভিন্ন দাবী দাওয়া নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসলেও তাদের ন্যায় সংগতিপূর্ণ দাবী পুরণ করা হচ্ছে না। আবার কোন কর্মকর্তা কমর্চারীর অন্যায় কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করলে সুযোগ পেলেই তারা করে ক্ষমতার অপব্যবহার। সাধারণ শ্রমিক কর্মচারীদের করা হয় সাময়িক বরখাস্ত বা শারীরিক মানসিক নির্যাতন। আর এই দুর্নীতিবাজদের সহযোগিতা করছে শ্রমিক কর্মচারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য গড়ে উঠা রেলওয়ে বিভিন্ন সংগঠনের দুর্নীতিবাজ নেতারা।
তিনি আরও বলেন, সংশোধিত নিয়োগ বিধিমালা-২০২০ সংশোধনের মাধ্যমে রেলওয়ে শ্রমিক কর্মচারী ও রেলওয়ে পোষ্যদের অধিকার গলা টিপে হত্যা করা হলেও এর প্রতিবাদ শ্রমিক সংগঠন গুলোর শক্তিশালী ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে না। আবার তাদেরকেই মে দিবসে বিশাল শোডাউন করতে দেখা যায়। ৮ঘন্টা কাজের সময় নির্ধারণের দাবীতে আন্দোলন সংগ্রামে শ্রমিক কর্মচারীরা তাদের বুকের তাজা রক্ত দিয়ে দাবী আদায় করেছিল। তাদের স্বরণেই আজ সারা বিশ্বে মহান মে দিবস পালিত হয়। কিন্তু বাংলাদেশের বিভিন্ন শ্রমিক কর্মচারীদের মতো রেলওয়ে মাঠ পর্যায়ের শ্রমিক কর্মচারীরা আজও তাদের ন্যায্য দাবী আদায় বঞ্চিত হয়ে আছে। বাংলাদেশের শ্রমিক সংগঠন গুলো যতোদিন রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি ও ভোটের রাজনীতিতে ব্যবহার হবে ততোদিন সাধারণ শ্রমিক কর্মচারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে না। বর্তমানে বাংলাদেশের মে দিবস মিটিং মিছিল আর শোডাউনের মে দিবসে পরিনত হয়েছে। আসুন সবাই এখান থেকে বেড়িয়ে এসে শ্রমিক কর্মচারীদের সামগ্রিক সমস্যা সমাধানে রাজনৈতিক দলের প্রভাবমুক্ত হয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলি।